মুহাম্মদ(সাঃ) বনু কোরাইজায় সম্পদের লোভে হত্যা করেছে ইয়াহুদীদের।

Posted by Adam Simon  |  No comments

উত্তর দিয়েছেন

ভাই চয়ন চৌধুরী  Chayan Chowdhury

  

বনু কোরাইযা গোত্রের মৃত্যুদণ্ড এবং রাসূলের সাঃ বিরুদ্ধে অপপ্রচারে জবাবঃ

বানু কুরাইযা গোত্রের হত্যার ব্যথায় জর্জরিত নাস্তিক ভাই , বোনদের এবং তথাকথিত প্রতিবাদী, বিবেকবান লেখকদের লেখাতে সত্যি সত্যিই অগ্নি-স্ফুলিঙ্গ দেখা যায়।
তারা রাসূল (সাঃ) কে সেই বিচারের জন্য অপরাধী সাব্যস্ত করেন ৷ 


আসুন জেনে নেই প্রকৃত ঘটনা,
মদিনার সনদ অনুযায়ী, মদিনার সাধারণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলে চুক্তি অনুসারে বনু কুরাইযা সহ সব ইহুদী গোত্র প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল যে তারা মুসলিমদের কোন শত্রুকে কোনরকম সাহায্য করবেনা। কোন বহিঃশত্রু মদিনা আক্রমণ করলে তারাও মুসলিমদের মতো স্বদেশ রক্ষার্থে নিজেদের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করবে। কিন্তু সন্ধির শর্ত ও স্বদেশের স্বাধীনতা ও সম্মানকে উপেক্ষা করে কুরাইযা সহ বাকী ইহুদী গোত্র একাধিকবার শত্রুপক্ষের সাথে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। বনু কুরাইজার ইহুদীদের এই অপরাধ আগে ক্ষমা করে দেয়া হয়। ভেঙ্গে ফেলা প্রতিজ্ঞাপত্র উহুদ যুদ্ধের পরে কুরাইযা গোত্র পুনর্বহাল করে এই শর্তে যে, এরপরে আর কখনোই তারা মুসলিমদের শত্রুদের সাথে কোন রকম যোগাযোগ ও সাহায্য করবেনা। ফলে তখন তাদের বিনাদণ্ডে ও বিনা ক্ষতিপূরণে মাফ করে দেয়া হয়। কিন্তু খন্দকের যুদ্ধের প্রাক্কালে প্রথম সুযোগ পাওয়া মাত্রই তারা এই সন্ধিপত্র ছিঁড়ে ফেলে শত্রুদলে যোগদান করে। কুরাইযা গোত্রের এই বিদ্রোহের খবর পাওয়া মাত্র আওস ও খাযরায গোত্রের প্রধান সাদ বিন উবাদা (রাঃ) ও সাদ বিন মুয়াদ (রাঃ) সহ আর কিছু সাহাবীকে মুহাম্মাদ (সাঃ) খন্দকের প্রান্ত থেকে কুরাইযা পল্লীতে পাঠান। তাঁরা কুরাইযা পল্লীতে উপস্থিত হয়ে আগের পৌণঃপুনিক চুক্তি ভাঙ্গার কথা তুলে ধরেন ও তাদেরকে এই বিশ্বাসঘাতকতার পরিণাম ভালোভাবে বুঝিয়ে দেন। কিন্তু আহযাবে মুসলিমদের পরাজয় সুনিশ্চিত ও খায়বার থেকেও ইহুদী দল মদিনা আক্রমণে আসছে – এই দুই বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে তারা উল্টা মুসলিমদের গালাগালি করা শুরু করে দেয়। তাদের দলপতি কাব বিন আসাদ বলে ওঠে, “মোহাম্মদ কে? আমরা তাকে চিনি না। আমরা কোনো সন্ধিপত্রের ধার ধারি না। তোমরা চলে যাও।”


এরপরে তারা খন্দকের যুদ্ধে যোগদান করে।
বানু নাদির গোত্রের হোয়াই-বিন-আখতাব মদিনা থেকে বিতাড়িত হবার পরে খাইবারে আসন গেড়ে বসে। সে কুরাইযা গোত্র প্রধান কাব-বিন-আসাদকে বোঝাতে সক্ষম হয় যে আরবের সকল পৌত্তলিক এখন একত্রিত। গাতাফান আর নজদের পৌত্তলিকরাও সাথে যোগ দিয়েছে। আর ঐদিকে খাইবার থেকে ইহুদীদের কয়েক হাজার সদস্যের বাহিনী খুব তাড়াতাড়ি এসে যোগ   দিতে যাচ্ছে আহযাবে। সুতরাং এটাই মুসলিমদের সমূলে উৎপাটন করার সুবর্ণ সুযোগ। কাব প্রথমে নিমরাজী থাকলেও শেষে খন্দকে আহযাব পক্ষে যোগ দিতে রাজী হয়।
খন্দক থেকে ফিরে এসে রাসুল (সাঃ) মদিনায় ফিরে যখন গোসল সারলেন তখন জীব্রাঈল (আঃ) এসে বানু কুরাইযা গোত্রের বিশ্বাসঘাতকতার কথা রাসুল (সাঃ)-কে স্মরণ করিয়ে দেন, ও তার পরপরই মুসলিম বাহিনী কুরাইযা অভিমুখে রওয়ানা হয়। মুসলিম বাহিনী কুরাইযার দূর্গের সামনে এসে পৌঁছলে তারা দূর্গ-তোরণ থেকে রাসুল (সাঃ) ও তাঁর সহধর্মীনিদের উদ্দেশ্যে অশ্রাব্য গালিগালাজ করতে থাকে। তাদের ধারণা ছিল খায়বার থেকে খুব তাড়াতাড়ি ইহুদী বাহিনী এসে পড়বে, আর তারপরে দুই ইহুদী বাহিনীর যৌথ আক্রমণে মুসলিমদের বিধ্বস্ত করে ফেলবে। মক্কার কোরাঈশরা যুদ্ধ ছেড়ে চলে গেছে বলে তারা বরং খুশীই ছিল, কেননা মদিনা প্রদেশের বিশাল সাম্রাজ্য এখন কেবল ইহুদীদের হয়ে যাবে। এরপরে যথারীতি অনেকদিন দূর্গের মধ্যে অবরূদ্ধ থেকে যখন তারা দেখলো যে খায়বার থেকে ইহুদী বাহীনির আসার কোনোই সম্ভবনা নেই তখন তারা আত্মসমর্পণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে রাসুল (সাঃ) এর কাছে আত্মসমর্পন না করে তারা তাদের পুরোনো মিত্র সাদ-বিন-মুয়াদের (রাঃ) কাছে নিজেদের ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেয়।সাদ রাঃছিলেন যুদ্ধে আহত যোদ্ধাদের একজন ৷ রাসূলের অনুপস্থিতে সাদ (রাঃ)বিচার করেন এবং সিদ্ধান্ত দেন কুরাইযা গোত্রের সকল যোদ্ধাদের প্রাণদণ্ড দেয়া হোক আর মহিলা ও শিশুদের বন্দী করা হোক। রায় দেয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই গুরুতর আহত সাদ (রাঃ) মারা যান ৷ 


তাহলে জানতে পারলাম,
(1) বনু কোরাইযা গোত্র বার বার চুক্তি ভঙ্গ করে এবং রাসূল সাঃ তাদের বারবার ক্ষমা করেন এবং সুযোগ দেন ৷
(2) তারা কোরাইশদের পক্ষ নিয়ে রাসূলের সাঃ বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ৷
(3) বনু কোরাইযা গোত্র শর্তসাপেক্ষে পূর্বের মিত্র সাদ রাঃ এর নিকট আত্মসমর্পণ করেন ৷
(4) যেহেতু বনু কোরাইযা গোত্র শর্তসাপেক্ষে আত্মসমর্পণ করে ,সেহেতু রাসূল (সাঃ) বিচারে চুক্তি অনুযায়ী হস্তক্ষেপ করেন নাই ৷
(5)রাসূল সাঃ বনু কোরাইযার বিচার করেন নাই ৷
(6)গুরুতর আহত সাদ (রাঃ) সকল যোদ্ধাকে হত্যার নির্দেশ দেন ৷ ( বিঃদ্রঃ যোদ্ধাদের সংখ্যা ছিল 300/400 জন)
পরিশেষে বলতে চাই, বনু কোরাইযা গোত্রের কোন নিরপরাধ ব্যাক্তির বিচার করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়নি বরং যারা মদীনার সকল মুসলমানকে হত্যা করতে চেয়েছিল, এবং যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল, এমন যোদ্ধাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল ৷ 


আচ্ছা, কোন দেশ, রাষ্ট্রদ্রোহীকে ক্ষমা করে?? প্রতিটি দেশে রাষ্ট্রদ্রোহীকে কি সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হয়না??
আমাদের সময়ে রাষ্ট্রদ্রোহীদের শাস্তি যদি মৃত্যুদণ্ড হয় ,তবে বনু কোরাইযা গোত্রের শাস্তি কেন ভুল হবে??

20:00 Share:
About Naveed Iqbal

Nulla sagittis convallis arcu. Sed sed nunc. Curabitur consequat. Quisque metus enim venenatis fermentum mollis. Duis vulputate elit in elit. Follow him on Google+.

0 komentar:

Get updates in your email box
Complete the form below, and we'll send you the best coupons.

Deliver via FeedBurner

Labels

Contact Form

Name

Email *

Message *

Text Widget

Recent News

About Us

Your Ads Here
back to top