উত্তর দিয়েছেন
ভাই নয়ন চৌধুরী (Nayan Chowdhury)

নাস্তিকদের দাবী প্যাগানদেবী লাত বা আল্লাতের ইবাদত করে মুসলমানরা। আর আল্লাহ্ শব্দটি এসেছে লাত বা আল্লাত থেকে!
জবাবঃ
জবাবের জন্য প্রথমেই জানা দরকার কে এই দেবী লাত বা আল্লাত?
---------------
লাত বা আল্লাতের পরিচয়ঃ
---------------
আল কোরআনের সুরা নজমে উজ্জা এবং মানাতের সঙ্গে লাতকে উল্লেখ করা হয়েছে ১৯ নম্বর আয়াতে। আল কোরআন, সুরা নজম, আয়াত ১৯,২০
হিশাম ইবনে আল কালবি লিখিত কিতাব আল আসনাম (মূর্তি সম্পর্কিত বই) থেকে জানা যায় ইসলাম পূর্ববর্তী যুগে আরবগণ বিশ্বাস করতেন লাত কাবা শরীফে বাস করেন। এবং সেখানেও তার একটি মূর্তি স্থাপিত ছিলো।
লাত বা আল-লাত (আরবী: اللات) ছিলেন আরবের প্রাক-ইসলামী যুগের একজন দেবী। তিনি মক্কার তিনজন প্রধান দেবীর একজন। মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন শরীফের ৫৩ নম্বর সুরা নজমের ১৯ নম্বর আয়াত বা বাক্যে লাতের কথা বর্ণিত হয়েছে যা থেকে জানা যায় ইসলাম পূর্ববর্তী সময়ে আরবের অধিবাসীগন মানাত ও উজ্জার সাথে লাতকে ঈশ্বরের মেয়ে হিসেবে বিবেচনা করত।
অর্থাৎ আরবদের কাছে লাত ছিল ঈশ্বরের কন্যা যার উজ্জা ও মানাত নামে আরো দুই বোন ছিল!
মুহাম্মদ (সঃ) এর নির্দেশে তায়েফ এ লাতের মন্দির গুড়িয়ে দেয়া হয়।
এবার আসাযাক আল্লাহ্ নামের উৎস ও এর অর্থের ব্যাপকতার বিশ্লেষণেঃ
---------------
আল্লাহ্ শব্দের উৎপত্তিঃ
---------------
‘আল্লাহ্’ শব্দের উৎপত্তি ও ধাতু নির্ণয় সম্পর্কে অভিধানবেত্তাদের
যেমন আল্লাহ আল কুরআনে বলেছনঃ
وَلَئِن سَأَلْتَهُم مَّنْ خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ وَسَخَّرَ ٱلشَّمْسَ وَٱلْقَمَرَ لَيَقُولُنَّ ٱللَّهُ ۖ فَأَنَّىٰ يُؤْفَكُونَ
আর যদি তুমি তাদেরকে প্রশ্ন কর, ‘কে আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং চাঁদ ও সূর্যকে নিয়োজিত করেছেন’? তারা অবশ্যই বলবে, ‘আল্লাহ’। তাহলে কোথায় তাদের ফিরানো হচ্ছে? (সূরা আনকাবুত,আয়াতঃ ৬১)
আল্লাহ শব্দের অপভ্রংশ হিব্রু ভাষায় ‘এল’, ‘এলোয়া’ ও ‘এলোহিম” রুপে এবং সংস্কৃত ভাষায় ‘অল্ল’, রুপে দৃষ্টিগোচর হয়। ‘আল্লাহ’ নামবাচক বিশেষ্য পদ মাত্র। ক্রিয়াপদে এর ব্যুৎপত্তি সিদ্ধ নয়। এই মহিমান্বিত নাম শুধুমাত্র বিশ্বপতি জগৎ স্রষ্টার জন্য নির্দিষ্ট।বাইবে
আল্লাহ্ নামের ইতিহাসঃ
---------------
আল্লাহ" শব্দটি আরবি "আল" (বাংলায় যার অর্থ সুনির্দিষ্ট বা একমাত্র) এবং "ইলাহ" (বাংলায় যার অর্থ ঈশ্বর বা সৃষ্টিকর্তা) শব্দদ্বয়ের সম্মিলিত রূপ, বাংলায় যার অর্থ দাড়ায় "একমাত্র সৃষ্টিকর্তা" বা "একক ঈশ্বর"। একই শব্দমূল-বিশিষ্ট
ইসলাম-পূর্ব আরবেও আল্লাহ নামের ব্যবহার খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু তা কেবল সৃষ্টিকারী দেবতা এবং খুব সম্ভবতঃ সবচেয়ে শক্তিশালী দেবতা বুঝাতে ব্যবহার করা হতো।আল্লাহ সম্পর্কে বিভিন্ন ধর্মে বিভিন্ন ধারণা থাকলেও পৃথিবীর প্রধান তিনটি ধর্মের অনুসারীদের অর্থাৎ মুসলমান, ইহুদী ও খ্রিস্টানদের কাছে আল্লাহ একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, অদ্বিতীয়, একমাত্র অভিভাবক এবং একমাত্র আরাধনাযোগ্য, একই সঙ্গে আদি-অন্তহীন, অবিনশ্বর এবং সকল কিছুর ওপর ক্ষমতাবান।
ইসলাম-পূর্ব আরবে পৌত্তলিক আরবরা একশ্বরবাদী ছিল না; তারা আল্লাহকে একক এবং অদ্বিতীয় মনে করতো না, বরং তার সাথে সঙ্গী-সাথী, এবং পুত্র-কন্যার ধারণা সংযুক্ত করেছিলো, যা ইসলামী যুগে সমূলে উৎপাটন করা হয়। ইসলামে আল্লাহ শব্দটি দ্বারা এক, অদ্বিতীয় এবং অবিনশ্বর ঈশ্বরের দিকে ইঙ্গিত করা হয়, এবং সমস্ত স্বর্গীয় গুণবাচক নামকে সেই একক সত্তার নাম বলে সংজ্ঞায়িত করা হয়। ইসলামী ভাষ্যনুযায়ী, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয়, সমস্ত-জগৎের-সৃষ
ইসলাম-পূর্ব আরবে, মক্কাবাসী পৌত্তলিকরা আল্লাহকে সৃষ্টিকর্তা দেবতা হিসেবে ধারণা করতো, এবং খুব সম্ভবতঃ সবচেয়ে শক্তিশালী দেবতা হিসেবে। কিন্তু একক এবং অদ্বিতীয় ঐশ্বরিক শক্তি হিসেবে নয়। বরং পৃথিবী-সৃষ্টিকা
তবে আরবি খ্রিস্টানরাও প্রাচীনকাল থেকে "আল্লাহ" শব্দটি ব্যবহার করে আসছেন। বাহাই, মাল্টাবাসী, মিজরাহী ইহুদি এবং শিখ সম্প্রদায়ও "আল্লাহ" শব্দ ব্যবহার করে থাকেন।
ইহুদীধর্মের পুস্তকেও আল্লাহ্ শব্দের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
যেহেতু আরবি এবং হিব্রু খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত সেমিটিক ভাষা, এটি বহুল প্রচলিত মতামত যে, আল্লাহ(আরবি শব্দমূল: ইলাহ) এবং বাইবেলে বর্ণিত ইলোহিম এর আদিশব্দ একই। ইহুদি ধর্মগ্রন্থে, ইলোহিম শব্দকে ঈশ্বরের (ইহুদি মতানুযায়ী যাকে ইয়াওহে বা জেহোবা বলা হয়) একটি বর্ণনামূলক নাম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
( তথ্যসূত্রঃ উইকি পিডিয়া)
উপরোক্ত আলোচনার প্রক্ষিতে বলা যায় আল্লাহ্ শব্দটি শুধু আরবেই নয় বিশ্বের অন্যান্য ভাষা এবং স্থানেও তেমন ভাবেই সৃষ্টির সূচনা থেকেই প্রচলিত ছিল!
প্যাগানদের দেবী লাত বা আল্লাত যাকে স্রষ্টার মেয়ে হিসেবে বিবেচনা করা হত তার সাথে মহাপরাক্রমশালী স্রষ্টা আল্লাহর কোন সম্পৃক্ততা নেই যা নাস্তিকরা দাবী করে।
বস্তুত-
ٱللَّهُ خَٰلِقُ كُلِّ شَىْءٍ ۖ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ وَكِيل لَّهُۥ مَقَالِيدُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۗ وَٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ بِـَٔايَٰتِ ٱللَّهِ أُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْخَٰسِرُون
আল্লাহ্ সব কিছুর স্রষ্টা এবং তিনি সব কিছুর তত্ত্বাবধায়ক। আসমানসমূহ ও যমীনের চাবিসমূহ তাঁরই কাছে। আর যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত। (সূরা যুমার;৬২-৬৩)
(স্ক্রিনশটে আল্লাহ্ নামের প্রতিটি অক্ষরের অর্থ দিলাম যেন আল্লাহ্ শব্দের ব্যাপকতা বুঝা যায় আল্লাহ্ শব্দের প্রতিটা অক্ষর আল্লাহর দিকে ইংগিত করে।আপনি যদি আলিফ বাদ দেন থাকে লিল্লাহ এর অর্থ আল্লাহর জন্য।যদি আলিফ ও লাম বাদ দেন হয় লাহু যার অর্থ তার জন্য।যদিদি সব বাদ দিয়ে শুধু "হা" রাখেন এর অর্থ হবে তার অর্থাৎ আল্লাহর।
অর্থাৎ আল্লাহ্ শব্দের প্রতিটা অক্ষর আল্লাহর দিকে ইংগিত করে।সুবাহানাল্লাহ!
16:00
Share:
0 komentar: