আল্লাহ ঋনগ্রস্থ। তাইতো আল্লাহ বলেছেন-"কে আছে আল্লাহকে উত্তম ঋন দেবে?"

Posted by Adam Simon  |  No comments

উত্তর দিয়েছেন

ভাই আহমেদ-  (Ahmed)

নাস্তিকের প্রশ্ন ও জবাবঃ-
 
প্রশ্নঃ- আল্লাহ্‌ অভাবী,ঋণগ্রস্ত তাই মানুষের কাছে কর্জ চাইছে। যে নিজেই অভাবী সে আমাদের কি দিবে?


জবাবঃ-
আল্লাহর পথে দান করলে আল্লাহ তা বহু গুণ বৃদ্ধি করে দেবেন:

আল্লাহ বলেনঃ
﴿ مَّنۡ ذَا الَّذِىۡ يُقۡرِضُ اللّٰهَ قَرۡضًا حَسَنًا فَيُضٰعِفَهٗ لَهٗۤ اَضۡعَافًا کَثِيۡرَةً‌ؕ وَاللّٰهُ يَقۡبِضُ وَيَبۡصُۜطُ وَاِلَيۡهِ تُرۡجَعُوۡنَ‏﴾
এমন কে আছে, যে আল্লাহকে করজ দেবে উত্তম করজ; অতঃপর আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ-বহু গুণ বৃদ্ধি করে দেবেন। আল্লাহ সংকুচিত করেন এবং তিনিই প্রশস্ততা দান করেন আর তাঁরই কাছে তোমরা সবাই ফিরে যাবে।(২:২৪৫)

তাফসিরঃ
আল্লাহর পথে বিভিন্ন সৎকাজে দানের প্রতি অনুপ্রেরণা :
(এমন) কোনো ব্যক্তি আছে কি, যে আল্লাহকে ঋণ দেবে উত্তম পন্থায় (অর্থাৎ নিঃস্বার্থভাবে)। অতঃপর আল্লাহ সেই (ঋণের বিনিময়ে নেকি এবং ধনমান্য) বৃদ্ধি করে দেবেন বেশি গুণে। (এবং এমন কোনো সন্দেহ করবে না যে ব্যয় করলে ধন-সম্পদ কমে যাবে। (কেননা এ তো) আল্লাহ তায়ালারই ইচ্ছাধীন, তিনি কম ও বেশি করেন। (ব্যয় করা না করার মধ্যে তা নির্ভরশীল নয়)। এবং তোমরা তাঁরই দিকে (মৃত্যুর পর) নীত হবে। (সুতরাং এখন সৎপথে ব্যয় করার প্রতিদান ও ওয়াজিব কাজে ব্যয় না করার শাস্তি তোমরা পাবে)।


আনুষঙ্গিক জ্ঞাতব্য বিষয়ঃ-
করজ বা ঋণ অর্থ নেক আমল ও আল্লাহর পথে ব্যয় করা। এখানে করজ বা ঋণ শব্দটি রূপক অর্থে বলা হয়েছে। অন্যথায় সব কিছুরই তো একমাত্র মালিক তিনিই। উদ্দেশ্য হচ্ছে, যেভাবে ঋণ পরিশোধ করা ওয়াজিব সেভাবে তোমাদের সৎপথে ব্যয়ের প্রতিদান অবশ্যই দেওয়া হবে।


বৃদ্ধি করার কথা একটি হাদিসে এসেছে যে আল্লাহর পথে একটি খেজুর দান করলে আল্লাহ তায়ালা তার সম্পদ এমনভাবে বৃদ্ধি করে দেবেন, তা পরিমাণে ওহুদ পাহাড়ের চেয়েও বেশি হবে।
আল্লাহকে ঋণ দেওয়ার এ অর্থও বলা হয়েছে যে তাঁর বান্দাদের ঋণ দেওয়া ও তাদের অভাব পূরণ করা। তাই হাদিসে অভাবীদের ঋণ দেওয়ারও অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। রাসুলে পাক (সা.) ইরশাদ করেছেন, কোনো একজন মুসলমান অন্য মুসলমানকে একবার ঋণ দিলে এ ঋণদান আল্লাহর পথে সে পরিমাণ সম্পদ দুইবার সদকা করার সমতুল্য।


ইবনে আরাবি (রহ.) বলেন, এ হাদিস শুনে মানুষের মধ্যে তিন ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়েছিল।
এক দল বলাবলি করত যে মুহাম্মদের রব অভাবী এবং আমাদের মুখাপেক্ষী হয়ে পড়েছে, আর আমরা অভাবমুক্ত। তাদের মন্তব্যের জবাবে আল্লাহপাক বলেন, 'অবশ্য অবশ্যই আল্লাহ শুনতে পেয়েছেন সেই লোকদের কথা, যারা বলে আল্লাহ অভাবী আর আমরা অভাবমুক্ত।


' দ্বিতীয় দল হচ্ছে,
যারা এ আয়াত শুনে এর বিরুদ্ধাচরণ ও কার্পণ্য অবলম্বন করেছে। ধন-সম্পদের লোভ তাদের এমনভাবে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে যে আল্লাহর পথে ব্যয় করার সামর্থ্য তাদের হয়নি।


তৃতীয় দল হচ্ছে,
যারা নিষ্ঠাবান মুসলমান। যারা এ আয়াত শোনার সঙ্গে সঙ্গেই সাড়া দিয়েছিলেন এবং নিজেদের পছন্দের সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করেছিলেন।
যেমন হজরত আবুদ দাহদাহ (রা.) প্রমুখ। তিনি এ আয়াত নাজিল হওয়ার পর রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে রাসুল (সা.)-কে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমার মা-বাবা আপনার জন্য উৎসর্গ হোক।
আল্লাহ কি আমাদের কাছে ঋণ চাচ্ছেন? তাঁর তো কোনো ঋণের প্রয়োজন পড়ে না।


জবাবে রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ এর বদলে তোমাদের বেহেশতে প্রবেশ করাতে চাচ্ছেন।
এ কথা শুনে আবুদ দাহদাহ বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! হাত বাড়ান। তিনি হাত বাড়ালেন। আবুদ দাহদাহ বললেন, আমি আমার দুটি বাগানই আল্লাহকে ঋণ দিলাম। 



রাসুল (সা.) বললেন, একটি আল্লাহর রাস্তায় ওয়াক্ফ করে দাও এবং অন্যটি নিজ পরিবারের ভরণ-পোষণের জন্য রেখে দাও। এরপর আবুদ দাহদাহ বললেন, আপনি সাক্ষী থাকুন, ওই দুটির মধ্যে যেটি উত্তম, সেটি আল্লাহর রাস্তায় ওয়াক্ফ করে দিলাম। এরপর রাসুল (সা.) বললেন, এর বদলে আল্লাহ তোমাকে বেহেশত দান করবেন। হজরত আবুদ দাহদাহ এ কথা তাঁর স্ত্রীকে জানালে তিনি শুনে খুশি হলেন।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম আল্লাহ্‌ এই আয়াতে নিজের জন্য নয় বরং মানুষের কল্যানে সম্পদ ব্যায় করার নির্দেশ বা উৎসাহ দিয়েছেন।


আর আল্লাহর এই উৎসাহ প্রদানকে নাস্তিকরা ভিন্ন পথে নিয়ে অপব্যাখ্যা করে বলছে আল্লাহ্‌ অভাবী তাই ঋন চাচ্ছে।
মূলত, এই মহাবিশ্বের প্রতিপালক আল্লাহ্‌, তিনি সকল কিছুর মালিক। তিনি অভাবী নন এবং কারো কাছে মুখাপেক্ষী নন।


এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনিই একমাত্র আল্লাহ। তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি দৃশ্য-অদৃশ্য এবং উপস্থিত-অনুপস্থিত সব বিষয়ে পূর্ণ জ্ঞান রাখেন। -সূরা হাশর: ২২
অন্যত্র বলা হয়েছে, তিনি সেই আল্লাহ যিনি আসমান ও জমিন এবং এর মধ্যবর্তী স্থানের সব কিছুর সৃষ্টিকারী। তিনি আলিমুল গায়েব। তিনি সব জায়গায় বিরাজমান। তিনি প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সব কিছুই দেখেন ও খবর রাখেন।


এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, আল্লাহ সকল দৃশ্য-অদৃশ্য ও উপস্থিত অনুপস্থিত সকল বিষয়ে পুরোপুরি জ্ঞাত। মহান আল্লাহই সব প্রাণীর রিজিকদাতা। কোনো সৃষ্টিকেই তিনি রিজিক থেকে বঞ্চিত করেন না। সকল প্রাণী সৃষ্টির পূর্বেই তিনি তাদের রিজিকের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। সব প্রাণীকেই তিনি রিজিক দেন এবং প্রতিপালন করেন।


মহান আল্লাহতায়ালা ক্ষমাশীল। অন্যায় বা ভুল করার তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি ক্ষমা করে দেন। কাউকে তিনি ফিরিয়ে দেন না। পবিত্র কোরআন মজিদে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ গাফুরুর রাহিম। আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল।’ –সূরা আলে ইমরান: ৩১
আল্লাহতায়ালা এমনই এক সত্তা যার কাছে কোনো কিছু প্রার্থনা করে কেউ বিফল হয় না। মানুষের যা কিছু প্রয়োজন, তা আল্লাহর নিকটই প্রার্থনা করা প্রয়োজন।


আল্লাহ্‌ আমাদের মাফ করুন, এবং নাস্তিকদের অপব্যাখ্যা থেকে আমাদের হেফাজত করুন,আমিন।
(তাফসিরে মা'আরেফুল কোরআন অবলম্বনে)

12:00 Share:
About Naveed Iqbal

Nulla sagittis convallis arcu. Sed sed nunc. Curabitur consequat. Quisque metus enim venenatis fermentum mollis. Duis vulputate elit in elit. Follow him on Google+.

0 komentar:

Get updates in your email box
Complete the form below, and we'll send you the best coupons.

Deliver via FeedBurner

Labels

Contact Form

Name

Email *

Message *

Text Widget

Recent News

About Us

Your Ads Here
back to top