আল্লাহ্‌ যদি থাকে তবে এত দারিদ্রতা কেন?

Posted by Adam Simon  |  No comments

উত্তর দিয়েছেন

ভাই চয়ন চৌধুরী     (Chayan Chowdhury)

 
এত দারিদ্রতার জন্য আল্লাহ দায়ী নয়৷

নাস্তিকদের সবচেয়ে বড় অভিযোগ গুলোর একটি হল যে– ////সত্যিই যদি কোন ‘পরম করুণাময়’ সৃষ্টিকর্তা থাকতো, তাহলে পৃথিবীতে এত ধনী, দরিদ্র থাকতো না৷ /////


ধনী বা দরিদ্র লোক থাকা মানে এই না যে কোন পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তা নেই। এর মানে এটাই যে কেন মানুষ ধনী বা দরিদ্র হয় তা নাস্তিকরা বুঝতে পারেনি। পৃথিবীতে কোন সমস্যা থাকার মানে এই না যে কোন পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তা নেই বরং এটাই প্রমাণ হয় যে নাস্তিকরা নিজের সীমাবদ্ধ জ্ঞান নিয়ে সৃষ্টিকর্তার সম্পর্কে নিজে নিজেই কিছু একটা ধারণা করে নিয়েছেন, যা সঠিক না।


নাস্তিকরা ধরে নিচ্ছেন, পৃথিবীতে যাবতীয় দুঃখ কষ্টের এবং ধনী - দরিদ্রের ব্যাবধানের জন্য শুধু আল্লাহ দায়ী। এখানে মানুষের কোন হাত নেই। আমরাও অনেক সময় ঠিকভাবে সময় নিয়ে চিন্তা করে দেখিনা এবং আল্লাহকে এর দোষ দেই। যেমন আপনি হয়তো পাশের বাড়ির গরিব মানুষদের কষ্ট দেখে ভাবছেন কেন আল্লাহ তাদেরকে এত কষ্ট দেয়? আল্লাহ একজন ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ারকে কত সুখে রেখেছে! বড় শিল্পপতিদের কত সম্পদ দিয়েছে তা নিয়ে শত অভিযোগ করছেন ৷ অনেক সম্পদের মালিক হবার জন্য কি তারা কোন পরিশ্রম করে নাই? দিন রাত পরিশ্রম করে পড়া লেখা করে একজন ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হয়েছে ৷ পাশের বাড়ির লোকটি যখন খেলার মাঠে মজা লুটছে তখন সেই ডাক্তার পড়ার টেবিলে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করছিল ।তাই তাদের , হীরা মনি, মুক্তা ,দামী সোনার গহনা আর গাড়ি বাড়ি হয়েছে । কিন্তু খেলার মাঠের লড়াকু সৈনিকের কোন লাভ হয়নি। তার বোকামী পূর্ন কাজ নিজেদের জীবনের 12 টা বাজিয়েছে ৷ টাকা বানানোর জন্য, শিক্ষিত হবার জন্য সঠিক ভাবে চেষ্টা করার তার সময়ই ছিল না ৷ নিজের জীবনের মূল্যবান সময়গুলো হেলায় নষ্ট করে সুখকে দুর দেশে পাচার করে দিয়েছে ,আর ঘরে এনেছে চরম দারিদ্রতা ৷ যার ফলে নিজের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে পরিবারের মানুষগুলো চরম গরিব হয়ে না খেয়ে মারা যাচ্ছে। এই সব গরিব লোক গুলো যদি সময়ের মূল্য দিত, নীতিতে স্বচ্ছ এবং দক্ষ হত, তারা নিজেদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সঠিকভাবে পরিশ্রমের জন্য ভাবতো, তরুণ বয়সের আকস্মিক আবেগকে গোপন রাখত, যতক্ষণ না তারা নিজেদেরকে দক্ষ হিসেবে তৈরি করতে পারে এবং নিজেরা যথেষ্ট প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, তবে সকল সুখ ভোগ করতে পারত ৷ আজকে তাদের এই অবস্থা হত না। আল্লাহ তাদের বিপুল পরিমাণ সময় এবং কর্ম করার শক্তি দিয়েছিলেন, যেরকম কিনা তিনি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার এবং বড় ব্যাবসায়ীদের দিয়েছেন। কিন্তু ধনীরা নিজের সময় এবং যেগ্যতাকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে বিরাট বড় লোক হয়ে গেছে। অন্যদিকে দরিদ্র লোকগুলো অল্প সুখের বিনিময়ে সারাজীবনের সকল সুখ নষ্ট হয়ে যাবার সুযোগ করে দিয়ে ফকির হয়ে গেছে।


এখন অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন, আল্লাহ কেন নিজে সকলকে সমান দিল না?
প্রথম কথা হল আল্লাহ সকল মানুষকে তাঁর দান পৌঁছে দেন কিন্তু তারপর মানুষ তাই পায় যা সে পরিশ্রম করে অর্জন করে ৷
20] كُلًّا نُمِدُّ هٰؤُلاءِ وَهٰؤُلاءِ مِن عَطاءِ رَبِّكَ ۚ وَما كانَ عَطاءُ رَبِّكَ مَحظورًا
[20] এদেরকে এবং ওদেরকে প্রত্যেককে আমি আপনার পালনকর্তার দান পৌছে দেই এবং আপনার পালকর্তার দান অবধারিত।( সূরা বনী ইসরাঈল)
[39] وَأَن لَيسَ لِلإِنسٰنِ إِلّا ما سَعىٰ
[39] এবং মানুষ তাই পায়, যা সে করে( সূরা আন নাজম)
দ্বিতীয় কথা হল আল্লাহ দিতে পারতেন কিন্তু এতে কি বিশ্বে মানুষ বেঁচে থাকতে পারত?
কখনও বাঁচতে পারত না বরং ধ্বংস হয়ে যেত মানব সভ্যতা ৷
 

ধরুন, জন্মের পরই একটি শিশুর জন্য একটি টাকার মেশিন দিয়ে দিল যাতে চাপ দিলেই টাকা বের হয় ৷
তাহলে পৃথিবীর প্রতিটি লোক একটি টাকার মেশিনের মালিক হত ৷ তখন কে আপনার বিশাল প্রাসাদ তুল্য বাড়ি বানাত? তাজমহল, পিরামিড, চীনের প্রাচীর কে বানাত? আপনার বাড়িতে বা কোম্পানিতে কে চাকরি করত? কে আপনার ঘর পরিস্কার করতে আসত? কে টয়লেট পরিস্কার করত? রাস্তার ময়লা কে পরিস্কার করত?
বিমান, ফ্রিজ, টিভি, গাড়ি, এবং আরামের এসি কে বানাত? শ্রমিক হিসেবে কি কাউকে পাওয়া যেত? আপনার জন্য কে খাদ্য উতপাদন করত? খাদ্যের অভাবেই ত মরে যেত কোটি কোটি মানুষ!


তবে এটাও ঠিক যে আল্লাহ জানেন যে পৃথিবীতে মানুষ পাঠালে পৃথিবীর অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য মানুষের মাঝে কিছু ভেদাভেদ তৈরি করা প্রয়োজন ৷ তাই তিনি নিজেও কিছু বিভেদ তৈরি করেছেন ৷ কাউকে দিয়েছেন অসাধারণ মেধা, কাউকে দিয়েছেন শারীরিক শক্তি ৷ কিছু লোককে বানিয়েছেন কালো ,লম্বা খাট,অন্ধ, বোবা বা বধির এবং এটাই কল্যানকর পৃথিবীতে মানুষের টিকে থাকার জন্য ৷ তাই আল্লাহ বলেছেন
[21] انظُر كَيفَ فَضَّلنا بَعضَهُم عَلىٰ بَعضٍ ۚ وَلَلءاخِرَةُ أَكبَرُ دَرَجٰتٍ وَأَكبَرُ تَفضيلًا
[21] দেখুন, আমি তাদের একদলকে অপরের উপর কিভাবে শ্রেষ্ঠত্ব দান করলাম। পরকাল তো নিশ্চয়ই মর্তবায় শ্রেষ্ঠ এবং ফযীলতে শ্রেষ্ঠতম।( সূরা বনী ইসরাইল) 



أَهُمْ يَقْسِمُونَ رَحْمَةَ رَبِّكَ نَحْنُ قَسَمْنَا بَيْنَهُم مَّعِيشَتَهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَرَفَعْنَا بَعْضَهُمْ فَوْقَ بَعْضٍ دَرَجَاتٍ لِيَتَّخِذَ بَعْضُهُم بَعْضًا سُخْرِيًّا وَرَحْمَتُ رَبِّكَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَ (32
তারা কি আপনার পালনকর্তার রহমত বন্টন করে? আমি তাদের মধ্যে তাদের জীবিকা বন্টন করেছি পার্থিব জীবনে এবং একের মর্যাদাকে অপরের উপর উন্নীত করেছি, যাতে একে অপরকে সেবক রূপে গ্রহণ করে। তারা যা সঞ্চয় করে, আপনার পালনকর্তার রহমত তদপেক্ষা উত্তম।( সূরা যুখরুফ)
দেখুন 21 এবং 32 নাম্বার, উভয় স্থানেই একটি কথা আসছে যে পরকালই উত্তম ৷ দুনিয়াতে কম পাওয়া মানে আখেরাতেও কম পাওয়া নয় ৷
বরং যারা দরিদ্র তাদের জন্য আখেরাতে রয়েছে সুসংবাদ ৷ হাদীসে এসেছে এই দুনিয়াতে কম পেলেও, পরকালে তারা ঠিকই ধনীদের চেয়ে 500 বছর পূর্বে জান্নাতে যাবে!


সকল মানুষকে অধিক দানের পরিনতি সম্পর্কেও আল্লাহ সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন ৷
وَلَوْ بَسَطَ اللَّهُ الرِّزْقَ لِعِبَادِهِ لَبَغَوْا فِي الْأَرْضِ وَلَٰكِنْ يُنَزِّلُ بِقَدَرٍ مَا يَشَاءُ ۚ إِنَّهُ بِعِبَادِهِ خَبِيرٌ بَصِيرٌ
যদি আল্লাহ তাঁর সকল বান্দাকে প্রচুর রিযিক দিতেন, তবে তারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করত। কিন্তু তিনি যে পরিমাণ ইচ্ছা সে পরিমাণ নাযিল করেন। নিশ্চয় তিনি তাঁর বান্দাদের খবর রাখেন ও সবকিছু দেখেন।
[আল কোরআন ৪২:২৭]
অতএব পরিশ্রম করুন এবং ততটুকুই অর্জন করুন যতটুকুর যোগ্যতা রয়েছে ৷

14:00 Share:
About Naveed Iqbal

Nulla sagittis convallis arcu. Sed sed nunc. Curabitur consequat. Quisque metus enim venenatis fermentum mollis. Duis vulputate elit in elit. Follow him on Google+.

0 komentar:

Get updates in your email box
Complete the form below, and we'll send you the best coupons.

Deliver via FeedBurner

Labels

Contact Form

Name

Email *

Message *

Text Widget

Recent News

About Us

Your Ads Here
back to top